মরা গরুর মাংস বিক্রির চেষ্টার দায়ে মাত্র ৫ হাজার টাকা জরিমানা!

বরিশালের গৌরনদীতে বিক্রির উদ্দেশ্যে মরা গরু জবাই করে মাংস সংগ্রহের দায়ে এক কসাইকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমান আদলত। তবে সোমবার রাতেই এই ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের রায় নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে এলাকাবাসী।

পুলিশ জানায়, সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার বেজগাতি গ্রামের আলী আহাম্মেদ সরদারের দুটি গরু অসুস্থ হয়ে মারা যায়। রাত ৯টার দিকে ওই মরা গরু দুটিকে জবাই করে তার মাংস উপজেলার টরকী বাজারে বিক্রির উদ্দেশে সংরক্ষণ করছিলেন খোকন সরদার (৪২) নামে এক কসাই। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে গৌরনদী মডেল থানা পুলিশ তাৎক্ষণিক সেখানে অভিযান চালিয়ে মরা গরুর মাংসসহ কসাই খোকন সরদার (৪২) ও গরুর মালিক আলী আহম্মদ সরদারকে (৪০) হাতেনাতে আটক করে।

স্থানীয়রা জানায়, এরপর এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল আটকদের ছেড়ে দিতে ও ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে থানায় জোর তদবির চালায়। এতে ব্যার্থ হয়ে তারা উপজেলা ভ্রাম্যমাণ আদালতের দ্বারস্ত হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত রাত ১১টার দিকে কসাই খোকন সরদার ও গরুর মালিক আলী আহাম্মেদ সরদারকে মাত্র ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেন। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের এ লঘু দণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা আরও জানায়, ভ্রাম্যমাণ আলালত কসাই খোকন সরদারকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করলেও জব্দ করা  গরুর মাংসগুলো ধ্বংস করেননি। মাংসগুলো কসাইকে ফেরত দিয়ে এসেছেন। কসাই সেগুলো ফ্রিজে রেখেছেন। ফলে ওই মাংসগুলো আবারো বাজারে বিক্রি হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, মরা গরুর মাংস বিক্রির চেষ্টার জরিমানা যদি ৫ হাজার টাকা হয়, তাহলে এ অপরাধে পুলিশ তো আর কাউকে গ্রেফতার করবে না।

তিনি প্রশ্ন করে বলেন, এভাবে কি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা যায়?

এ প্রসঙ্গে উপজেলা ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও গৌরনদী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারিয়া তানজিন বলেন, পরিস্থিতি ও স্বীকারোক্তি বিবেচনায় কসাইকে ওই শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এটা লঘু বা গুরু দণ্ডের কোন বিষয় নয়। প্রথমবার তাকে এ শাস্তি দেওয়া হয়েছে। পরবর্তিতে তিনি এমন কাজ করলে তাকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।

গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. গোলাম ছরোয়ার বলেন, আমারা আমাদের কাজ করেছি, আর ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের কাজ করেছেন। এখনে আমার কোন কথা নেই।

আপনি আরও পড়তে পারেন